Tuesday, 26 November 2024

বিদেশে উচ্চ শিক্ষাঃ ভাষা দক্ষতা পরীক্ষার খুঁটিনাটি

 

বিদেশে উচ্চ শিক্ষাঃ ভাষা দক্ষতা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা


বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জন করার স্বপ্ন অনেক শিক্ষার্থীর মনেই জাগ্রত হয়। কিন্তু এই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার পথে ভাষার দক্ষতা একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করে। উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পূর্বশর্ত হিসেবে বিভিন্ন ভাষা পরীক্ষার ফলাফল প্রয়োজন হয়। পৃথিবীজুড়েই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুটি প্রধান ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ গৃহীত হয়একটি হলো বিদেশি ভাষা (TOEFL) এবং অন্যটি আন্তর্জাতিক ইংরেজি ভাষা পরীক্ষা পদ্ধতি (IELTS)এই পরীক্ষাগুলোর মধ্যে যেকোনো একটিতে নির্দিষ্ট স্কোর অর্জন আপনাকে পছন্দের প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করতে সাহায্য করবে। তাই এ প্রক্রিয়াটি বিদেশে অধ্যয়নের একটি অপরিহার্য অংশ। তবে ভাষা দক্ষতার এই পরীক্ষা এবং তাদের স্কোরিং পদ্ধতি আলাদা। তাই আপনি কোনটি বেছে নেবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছুটা জানা থাকলে তা অন্যদের থেকে আপনাকে এগিয়ে রাখবে।

TOEFL IELTS-এর মধ্যে প্রধান পার্থক্য

TOEFL-এর জন্য সাধারণত পরীক্ষার সময় আপনি US ইংরেজি বা UK ইংরেজির যেকোনো একটি ব্যবহার করতে পারবেন। দুটিকে মিশ্রিত করতে পারবেন না। যেখানে IELTS একটু বেশি নমনীয় বলে মনে হয়TOEFL প্রধানত একাধিক পছন্দের প্রশ্ন নিয়ে গঠিত। IELTS-এ প্রশ্নগুলো কীভাবে তৈরি হয় এবং উত্তর দিতে হবে তার মধ্যে রয়েছে আরও বৈচিত্র্য। IELTS পরীক্ষা TOEFL-এর চেয়ে ছোট।

TOEFL iBT

যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে TOEFL স্কোর প্রয়োজন, সেগুলো সাধারণত আপনাকে একটি নির্দিষ্ট iBT স্কোর পূরণ করতে বলে। iBT হলো ইন্টারনেটভিত্তিক পরীক্ষা এবং TOEFL মূল্যায়নের সর্বশেষ সংস্করণ। এটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রবেশের প্রয়োজনীয়তার জন্য পছন্দের পরীক্ষা। একই সঙ্গে TOEFL উচ্চশিক্ষার জন্য সর্বাধিক স্বীকৃত ইংরেজি দক্ষতা পরীক্ষা।

TOEFL স্কোর

যদিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সামগ্রিক TOEFL স্কোর চাইবে। তবে কখনো প্রতিটি বিভাগে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক পয়েন্ট পূরণ করতে হতে পারে।

TOEFL iBT-এর পরীক্ষা বিভাগ

 TOEFL iBT পরীক্ষা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাষা দক্ষতা দ্বারা বিভক্ত। এখানে পড়া, শোনা, লেখা এবং কথার দক্ষতা যাচাই করা হয়সামগ্রিক স্কোরের জন্য প্রতি বিভাগে একটি স্কোর দেওয়া হয়TOEFL iBT সম্পূর্ণ হতে প্রায় চার ঘণ্টা সময় লাগে। পরীক্ষার সময় একটি বাধ্যতামূলক বিরতি থাকে। পঠন এবং শোনার বিভাগগুলো প্রশ্নের সংখ্যার ওপর নির্ভর করে দৈর্ঘ্যে পরিবর্তিত হতে পারে।

স্কিল স্কোরিং লেভেল পঠন 0-30 উচ্চ : 22-30 মাঝারি: 15-21 নিম্ন: 0-14

শ্রবণ 0-30 উচ্চ : 22-30 মাঝারি: 14-22 নিম্ন : 0-13

কথা বলা 0-30 ভালো : 26-30 ন্যায্য: 18-25 সীমিত : 10-17 দুৰ্বল : 0-16

লেখা 0-30 ভালো : 24-30 মেলা : 17-23 সীমিত : 1-16 মোট 0-120

TOEFL পড়ার বিভাগ

এ বিভাগটি একটি কম্পিউটার দ্বারা স্কোরিং করা হয়এতে একাডেমিক পড়া এবং সেগুলো সম্পর্কে আপনার বোঝার ওপর ভিত্তি করে ৩৬-৫৬টি কাজ থাকে।

TOEFL শোনার বিভাগ

এ বিভাগটিও একটি কম্পিউটার দ্বারা স্কোরিং করা হয়তবে এতে বক্তৃতা, শ্রেণিকক্ষে আলোচনা এবং কথোপকথন শোনার ওপর ভিত্তি করে ৩৪-৫১টি কাজ থাকে। তারপর সেগুলো সম্পর্কে আপনার বোঝার বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়

TOEFL স্পিকিং বিভাগ

এই বিভাগে ছয়টি কাজ রয়েছে। একজন পরীক্ষক দ্বারা স্কোরিং করা হয়বিভাগটি ২০ মিনিটের জন্য স্থায়ী হয়

TOEFL লেখার বিভাগ

বিষয়বস্তু এবং অর্থ সম্পর্কে সর্বোত্তম বোঝার জন্য এ বিভাগটি পরীক্ষক এবং কম্পিউটার রেটিং দিয়ে স্কোরিং করা হয়েছে। প্রায় ৫০ মিনিটের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে দুটি কাজ রয়েছে।

IELTS একাডেমিক

UK বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইংরেজি ভাষার দক্ষতার সার্টিফিকেশন হিসেবে IELTS একাডেমিক পরীক্ষার স্কোর গ্রহণ করে, তবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এবং তাদের প্রোগ্রামগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় স্তরটি পরিবর্তিত হয়আইইএলটিএস একাডেমিক কানাডা এবং ইউরোপেও ব্যাপকভাবে স্বীকৃত।

IELTS স্কোর

ইংরেজি ভাষার স্তর প্রকাশ করার জন্য অর্ধ স্কোরসহ শূন্য থেকে নয়টির মধ্যে একটি ব্যান্ড প্রদান করা হয়

ব্যান্ড স্কোর স্কিল লেভেল-

ব্যান্ড 9 =বিশেষজ্ঞ ব্যান্ড ৪ =খুব ভালো ব্যান্ড 7 = ভালো ব্যান্ড 6 =দক্ষ   ব্যান্ড 5 =বিনয়ী

আইইএলটিএসের পরীক্ষা বিভাগ

আইইএলটিএস লিসেনিং, রিডিং ও রাইটিং বিভাগগুলো একই দিনে নেওয়া হয়আপনি অন্যান্য বিভাগের মতো একই দিনে বা এক সপ্তাহ আগে বা পরে আপনার স্পিকিং টেস্ট বেছে নিতে পারেন।

আইইএলটিএস শোনার বিভাগ

পরীক্ষার শ্রবণ বিভাগে, আপনি চারটি রেকর্ড করা মনোলগ বা কথোপকথন শুনবেন। আপনার উত্তর লিখতে ৩০ মিনিট দেওয়া হবে।

পড়ার বিভাগ

পরীক্ষার রিডিং সেকশনে এক ঘণ্টা সময় লাগে; এটি কাজসহ তিনটি দীর্ঘ পঠন প্যাসেজ নিয়ে গঠিত। প্রদত্ত পাঠগুলো সম্ভবত অন্তর্ভুক্ত গ্রাফ এবং চিত্রসহ বই, জার্নাল ও সংবাদপত্রে পাওয়া যাবে।

লেখার বিভাগ

লেখার বিভাগে, আপনাকে প্রদত্ত গ্রাফ, টেবিল বা ডায়াগ্রামে ন্যূনতম ১৫০ শব্দ লিখতে হবে। তারপর আপনার কাছে ন্যূনতম ২৫০ শব্দের একটি সংক্ষিপ্ত রচনা কাজ থাকবে।

স্পিকিং সেকশন

এ বিভাগটি তুলনামূলকভাবে ছোট এবং মাত্র ১৫ মিনিট স্থায়ী হতে পারে। আপনাকে একটি পরিচিত বিষয় সম্পর্কে দীর্ঘ কথা বলতে হবে এবং প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এ বিভাগটি একজন পরীক্ষকের মুখোমুখি যাঁরা আপনার স্কোর নির্ধারণ করবেন।

পরীক্ষার প্রস্তুতি:

·         প্রত্যেক দিনের অধ্যয়ন: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে পড়াশোনা করুন এবং বিভিন্ন ভাষার উৎস থেকে প্র্যাকটিস ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করুন।

·         মক টেস্ট: মক টেস্ট দিয়ে পরীক্ষা দিন এবং ফলাফল বিশ্লেষণ করুন।

·         ভাষা কোর্স: প্রয়োজন হলে ভাষার দক্ষতা উন্নত করার জন্য বিশেষ কোর্সে অংশগ্রহণ করুন।

·         স্কোর উন্নয়ন: প্রতিটি সেকশনে ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য দুর্বল দিকগুলি উন্নত করুন।

কোন পরীক্ষাটি দেবেন?

  • বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা: প্রথমে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আপনি আবেদন করতে চান, সেগুলো কোন পরীক্ষা গ্রহণ করে তা দেখুন।
  • আপনার শক্তি: কোন পরীক্ষার ফরম্যাট আপনার জন্য সবচেয়ে সহজ মনে হয়?
  • পরীক্ষার তারিখ ও স্থান: আপনার জন্য সুবিধাজনক তারিখ ও স্থানে কোন পরীক্ষা পাওয়া যায়?

পরীক্ষার প্রস্তুতি

  • ইংরেজি দক্ষতা বাড়ান: নিয়মিত ইংরেজি পড়ুন, শুনুন এবং বলুন।
  • মডেল টেস্ট দিন: বিভিন্ন পরীক্ষার মডেল টেস্ট দিয়ে নিজেকে মূল্যায়ন করুন।
  • কোচিং নিন: প্রয়োজনে কোনো ভালো কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে পারেন।

পরীক্ষার দিন

  • সময়মতো পৌঁছান: পরীক্ষা কেন্দ্রে যথাসময় পৌঁছানোর চেষ্টা করুন।
  • শান্ত থাকুন: পরীক্ষার সময় শান্ত থাকুন এবং নিজের উপর আস্থা রাখুন।
  • সঠিক উত্তর চিহ্নিত করুন: প্রতিটি প্রশ্ন ভালো করে পড়ুন এবং সঠিক উত্তর চিহ্নিত করুন।

পরীক্ষার গুরুত্ব

ভাষা দক্ষতা পরীক্ষার স্কোর কেবল ভর্তির জন্যই নয়, বরং বিদেশে যোগাযোগের জন্যও সাহায্য করে। দক্ষতা যত ভালো, ততই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আপনি একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন।

বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য ভাষার দক্ষতা পরীক্ষা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। উপযুক্ত প্রস্তুতি ও মনোযোগের মাধ্যমে এই পরীক্ষাগুলিতে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। আপনার ভাষার দক্ষতা উন্নয়নের জন্য নিয়মিত চর্চা এবং সঠিক গাইডলাইন অনুসরণ করলে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আপনার স্বপ্ন পূরণ সহজ হবে।

প্রতিবেদনটি লিখেছেন:
লেখক, গবেষক ও স্কাউটার
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন

শিক্ষকবায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্সমাস্টার্স) মাদরাসা

 

 

 

Saturday, 23 November 2024

 


বিভিন্ন সময়ে আমরা সবাই হাতের লেখাকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতে চাই। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বা ক্লাসের নোট নেওয়ার সময় হাতের লেখা সুন্দর হওয়ার গুরুত্ব উপলব্ধি করে। হাতের লেখা শুধুমাত্র পাঠযোগ্যতা নয়, এটি ব্যক্তিত্ব ও শৃঙ্খলাও প্রকাশ করে।বর্তমান ডিজিটাল যুগে স্মার্ট ফোন, কম্পিউটার এবং ই-মেইল ব্যবহারের কারণে হাতে লেখার চর্চা কমে গেছে। তবুও, শিক্ষাক্ষেত্রে বা পরীক্ষার খাতায় হাতে লেখা গুরুত্ব কোনো অংশে কমেনি। পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর হাতের লেখা শিক্ষক ও পরীক্ষকউভয়েরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কিছু সহজ কৌশল অনুশীলনের মাধ্যমে হাতের লেখা সুন্দর করা সম্ভব। এমনই কিছু কৌশল তুলে ধরা হলো:

সঠিক কলমের ব্যবহার

হাতের লেখার ক্ষেত্রে কলমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লেখার সময় এমন কলম বেছে নিতে হবে যা হালকা ও ব্যবহার করা সহজ। অনেকেই অতিরিক্ত ভারী বা কম গতিসম্পন্ন কলম ব্যবহার করেন, যার ফলে হাত দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং লেখা সুন্দর হয় না। একটি হালকা ও আরামদায়ক কলম দিয়ে লিখলে হাতের লেখা স্বাভাবিকভাবে সুন্দর হয়কলমের ধরন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি তা হালকাভাবে ধরে লেখা প্রয়োজন। অতিরিক্ত চাপ দিয়ে কলম ধরলে আঙুলে ব্যথা হতে পারে এবং লেখার মান খারাপ হয়ে যায়তাই কলম হালকাভাবে ধরে, স্বাভাবিক গতিতে লিখতে হবে।

বর্ণমালার সঠিক অনুশীলন

হাতের লেখা সুন্দর করার অন্যতম প্রধান শর্ত প্রতিটি বর্ণ ও অক্ষর সঠিকভাবে লেখা। হাতের লেখার সৌন্দর্য নির্ভর করে প্রতিটি অক্ষরের সঠিক আকার ও বিন্যাসের ওপর। স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণপ্রতিটি অক্ষর আলাদা করে পরিষ্কারভাবে লেখার অভ্যাস করতে হবে। যেমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা একত্রিত হয়ে বিশাল মরুভূমি গঠন করে, তেমনি প্রতিটি অক্ষর সুন্দর হলে পুরো লেখাটাই সুন্দর দেখাবে। শুধু বর্ণমালার আকার নয়, লাইন গ্যাপ ও মাত্রা সঠিক রাখা প্রয়োজন। এ জন্য প্রতিদিন কিছুটা সময় বর্ণমালা অনুশীলনে ব্যয় করলে হাতের লেখার মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে।

সোজা করে লেখা

লেখার সময় অনেকেই লক্ষ্য করেন যে তাদের লেখাগুলো বাঁকা হয়ে যায়বাঁকা লেখার কারণে লেখার সৌন্দর্য নষ্ট হয় এবং তা পড়তে অসুবিধা হয়সোজা লাইন ধরে লেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে প্রথমদিকে পেনসিল দিয়ে সরলরেখা টেনে লেখা যেতে পারে। এ ছাড়া লেখার সময় শরীরের অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ। সোজা হয়ে বসে লেখার অভ্যাস করতে হবে, কারণ ঝুঁকে বা বাঁকা হয়ে বসলে হাতের লেখা ঠিকঠাক হয় না। লেখার সময় মনোযোগ দিতে হবে যেন প্রতিটি লাইন সোজা থাকে এবং লেখার বিন্যাস সুন্দর হয়

মাঝারি আকারের অক্ষর ব্যবহার করা

হাতের লেখা সুন্দর করতে অক্ষরের আকারও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়অক্ষরগুলো খুব ছোট বা খুব বড় হলে তা দেখতেও খারাপ লাগে এবং পড়তে অসুবিধা হয়তাই অক্ষরের আকার মাঝারি রাখার চেষ্টা করতে হবে। মাঝারি সাইজের অক্ষর দেখতে সুন্দর লাগে এবং পড়ার জন্যও উপযোগী হয়বড় বা ছোট অক্ষরের পরিবর্তে প্রতিটি অক্ষর যেন পরিমিত আকারে থাকে সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।

মনোযোগ সহকারে এবং ধীরে লেখা

অনেকেই দ্রুত গতিতে লেখার চেষ্টায় হাতের লেখার সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলে। দ্রুত গতিতে লেখা প্রয়োজনীয় হলেও, হাতের লেখার স্পষ্টতা ও সৌন্দর্য বজায় রাখা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত লিখতে গিয়ে অক্ষরগুলো অস্পষ্ট হয়ে গেলে লেখার মান কমে যায়তাই দ্রুত লেখার সময়ও পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে ধীরে এবং পরিষ্কারভাবে লেখার অভ্যাস করতে হবে। প্রতিটি অক্ষর ও শব্দের প্রতি মনোযোগ দিলে হাতের লেখার মান উন্নত হবে।

কাটাকাটি থেকে বিরত থাকা

লেখার সময় কাটাকাটি করা বা ওভার রাইটিং করা হাতের লেখার সৌন্দর্য কমিয়ে দেয়যদি কোনো কিছু কেটে দিতে হয়, তাহলে একবারে সোজা টানে কেটে দেবে। কাটাকাটির ফলে লেখা অপরিষ্কার দেখায় ও পড়তে অসুবিধা হয়তাই হাতের লেখার মান বজায় রাখতে যতটা সম্ভব কাটাকাটি থেকে বিরত থাকতে হবে।

নিয়মিত অনুশীলন করা

হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো নিয়মিত অনুশীলন। প্রতিদিন কিছুটা সময় নির্দিষ্ট করে হাতের লেখার অনুশীলন করলে ধীরে ধীরে লেখার মান উন্নত হয়অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে হাতের লেখা আর সুন্দর করা সম্ভব নয়কিন্তু সত্যি কথা হলো, যেকোনো বয়সে নিয়মিত চর্চা করলে হাতের লেখা সুন্দর করা সম্ভব। প্রতিদিন অনুশীলনের মাধ্যমে হাতের লেখাকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন করে তোলা যায়

আরামদায়ক অবস্থানে লিখুন: একটি আরামদায়ক অবস্থানে বসে লিখুন যাতে আপনার হাত এবং হাতের কবজি সহজে চলতে পারে।

ইচ্ছেমতো কাগজ ব্যবহার করুন: লাইনের কাগজে লেখা চর্চা করুন, যাতে আপনার অক্ষরগুলো একই লাইনে থাকেপরে নিরবচ্ছিন্ন পৃষ্ঠায় চর্চা করুন।

আকার এবং ফাঁক বুঝে লিখুন: অক্ষরগুলোর আকার সঠিক রেখে লিখুন এবং অক্ষরগুলোর মধ্যে পর্যাপ্ত ফাঁক রাখুন।

শব্দের মাঝে ফাঁক রাখুন: প্রতিটি শব্দের মধ্যে স্পেস রেখে পরিষ্কারভাবে লিখুন। এটি আপনার লেখা আরও স্পষ্ট করবে।

হাতে চাপ সামঞ্জস্য রাখুন: পেন বা পেন্সিলের উপরে যথাযথ চাপ দিন, খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করলে লেখা খারাপ হয়ে যেতে পারে।

গতি নিয়ন্ত্রণ: হাতের লেখার গতি নিয়ন্ত্রণ করুন, খুব তাড়াহুড়া না করে ধীরে ধীরে লিখুন।

মডেল অনুসরণ করুন: সুন্দর হাতের লেখার নমুনা দেখে অনুশীলন করুন। আপনার লেখার স্টাইলকে উন্নত করতে পারেন।

প্রকৃত পদ্ধতি শিখুন: কিছু আনুষ্ঠানিক ক্যালিগ্রাফি পদ্ধতি বা লেখা স্টাইল শিখতে পারেন, যা আপনার হাতের লেখাকে আরও আকর্ষণীয় করতে সাহায্য করবে।

বিশ্রাম নিন: দীর্ঘ সময় ধরে লেখার পর হাতকে বিশ্রাম দিন। বিরতি নিলে হাতের ক্লান্তি দূর হয় এবং লেখা সহজ হয়

অনুশীলনের জন্য সময় নির্ধারণ করুন: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে অনুশীলন করুন। নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে লেখা উন্নত হয়

কলম ধরা শিখুন: কলমটি সঠিকভাবে ধরার অভ্যাস করুন। কলম বেশি শক্ত করে না ধরে হালকাভাবে ধরুন।

হাতের অবস্থান ঠিক রাখুন: লেখার সময় হাত ও কব্জি স্বাভাবিকভাবে রাখুন।

লেখার কোণ ঠিক করুন: খাতা বা পৃষ্ঠাকে সামান্য কাত করে রাখুন, যাতে লেখা আরামদায়ক

ধীরগতিতে লিখুনঃ তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে লিখুন। এটি অক্ষরগুলিকে সঠিকভাবে গঠন করতে সাহায্য করবে। প্রতিটি অক্ষর ও শব্দ পরিষ্কারভাবে লিখতে মনোযোগ দিন।

সঠিক ফন্ট অনুশীলন করুনঃ আপনার পছন্দের হাতের লেখার স্টাইল নির্বাচন করুন (যেমন, প্রিন্টিং বা কার্সিভ) একটি নির্দিষ্ট স্টাইল অনুশীলন করতে সময় দিন। অনুশীলনের জন্য অনলাইনে বা বইয়ে থাকা হাতের লেখা গাইড লাইন ব্যবহার করুন।

লাইন এবং স্পেসিং-এর দিকে মনোযোগ দিনঃ লেখার সময় অক্ষরের উচ্চতা ও প্রস্থ সমান রাখার চেষ্টা করুন। শব্দের মাঝে পর্যাপ্ত ফাঁকা রাখুন, যেন লেখা পরিষ্কার ও পড়তে সহজ হয়।

সাধারণ অনুশীলন বই ব্যবহার করুনঃ হাতের লেখা উন্নতির জন্য বিভিন্ন অনুশীলন বই পাওয়া যায়। এগুলি নিয়মিত অনুশীলন করলে উন্নতি সম্ভব।

হাতের পেশী শক্তিশালী করুনঃ হাতে সঠিক নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য পেন্সিল স্কেচিং, ডুডলিং, বা ড্রইং করার অভ্যাস করতে পারেন। এই কাজগুলি হাতের পেশী উন্নত করতে সাহায্য করবে।

উপযুক্ত সরঞ্জাম বাছাই করুনঃ আরামদায়ক কলম বা পেন্সিল ব্যবহার করুন। মসৃণ কাগজ ব্যবহার করুন যাতে লেখার অভিজ্ঞতা ভালো হয়।

প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় দিনঃ প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিট হাতের লেখা চর্চা করুন। নিজেকে ছোট ছোট লক্ষ্য দিন এবং উন্নতি লক্ষ্য করুন।

ফিডব্যাক নিনঃ আপনার লেখা অন্যদের দেখান এবং পরামর্শ নিন। নিজের পুরনো লেখার সঙ্গে বর্তমান লেখার তুলনা করুন।

অভ্যাসের ধারাবাহিকতা বজায় রাখুনঃ ধৈর্য ধরে প্রতিদিন চর্চা করুন। সময়ের সঙ্গে হাতের লেখা স্বাভাবিকভাবে উন্নত হবে।

এই কৌশলগুলো নিয়মিত অনুশীলন করলে আপনার হাতের লেখা উন্নত হবে। ধৈর্য ও অনুশীলনই এখানে মূল চাবিকাঠি। হাতের লেখা উন্নত করতে সময় ও ধৈর্য প্রয়োজন। এটি শুধুমাত্র লেখার সৌন্দর্য বাড়ায় না, বরং এটি মানুষের মনোসংযোগ ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাই প্রযুক্তির যুগে হাতের লেখা চর্চার গুরুত্ব আজও সমান।

প্রতিবেদনটি লিখেছেন:
লেখক, গবেষক ও স্কাউটার
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন

শিক্ষকবায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্সমাস্টার্স) মাদরাসা

 

Monday, 14 October 2024

FIRST AID VIDEO

 



প্রাথমিক প্রতিবিধান – Video Download  

ক্রমিক

বিষয়

পাঠ্য বই লিংক

Coller & cuff bandage

ডাউনলোড

First Aids Arm sling (1)

ডাউনলোড

First Aids Arm sling (2)

ডাউনলোড

4

Jaw Injury Bandage

ডাউনলোড

5

knee bandage

ডাউনলোড

6

Types of Bandage - Learn how to use a bandage

ডাউনলোড

7

bandage

ডাউনলোড

8

Jaw bandage

ডাউনলোড