এসএসসি
জেএসসি এবং এসএসসিতে বহিষ্কৃতরা পরীক্ষা দিতে পারবে
২০১৬ খ্রিস্টাব্দের জেএসসি পরীক্ষায় বহিষ্কৃত ৯৯ এবং ২০১৭’র
এসএসসি পরীক্ষায় বহিষ্কৃত ২৩১ জন পরীক্ষার্থীদের পরবর্তী পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি
দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির এক সভায় এ
সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
২০১৬ খ্রিস্টাব্দের জেএসসি পরীক্ষায় বহিষ্কৃত ৯৯ এবং ২০১৭’র এসএসসি পরীক্ষায়
বহিষ্কৃত ২৩১ জন পরীক্ষার্থীদের পরবর্তী পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া
হয়েছে।
বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০১৬
খ্রিস্টাব্দের জেএসসি এবং ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষায় নকলের দায়ে বহিষ্কৃত
পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগ, তাদের উত্তরপত্র,
কক্ষ পরিদর্শক, হল সুপার ও কেন্দ্র
সচিবদের প্রতিবেদন, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের জবাবসহ
বিভিন্ন বিষয়ে সভায় পর্যালোচানা হয়। প্রাপ্ত কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের
বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অপরাধের ধরণ অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে পরীক্ষা
পরিচালনা নীতিমালা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীদের
সংশ্লিষ্ট বছরের পরীক্ষা বাতিল করা হয় এবং পরবর্তী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া
হয়।
তবে বহিষ্কৃত
একজন পরীক্ষার্থীর ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের পরীক্ষা বাতিলসহ পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০১৭
খ্রিস্টাব্দের জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
ঢাকা
শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ করা হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ৬ই নভেম্বর
শিক্ষার্থীদের তথ্য সম্বলিত তালিকা প্রকাশ করবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। সম্ভাব্য
তালিকার মাধ্যমে ৭ থেকে ১২ই নভেম্বরের মধ্যে অনলাইনে ফরম পূরণ সম্পন্ন করতে হবে।
ফরম পূরণের ফি বাবদ একজন নিয়মিত
পরীক্ষার্থীকে দিতে হবে ১২৫৫ টাকা (যাদের ব্যবহারিক পরীক্ষা আছে), অনিয়মিত পরীক্ষার্থী
যারা ইতোপূর্বে পরীক্ষায় অংশ্রগহণ করেনি তাদের জন্য ১৩৫৫ টাকা।
২০১৮-তে এসএসসি
এইচএসসি পরীক্ষা একই প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত হবে
অভিন্ন প্রশ্নপত্রের যুগে আবারও ফিরে
যাচ্ছে দেশ। আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সারা দেশে একই প্রশ্নপত্রে
অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এ তথ্য
নিশ্চিত করেছেন।
মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন,
দুটি কারণে সরকার সারা দেশে একই প্রশ্নের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা
নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা হচ্ছে- ফলাফলে তারতম্য নিরসন এবং উচ্চশিক্ষায়
ভর্তিচ্ছুদের সমসুযোগ সৃষ্টি।
প্রশ্ন ফাঁস রোধে ২০১৫ সাল থেকে
এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা বোর্ডভিত্তিক আলাদা প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। ২০১৪ সালের
এইচএসসি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব (তখন
অতিরিক্ত সচিব) সোহরাব হোসাইনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তার কমিটিই প্রশ্ন ফাঁস রোধে
যেসব সুপারিশ করেছে, তার একটি ছিল প্রত্যেক বোর্ডে আলাদা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া। এতে এক
বোর্ডের প্রশ্ন ফাঁস হলে সব বোর্ডের পরীক্ষা স্থগিত হবে না। এর আগে ২০০৮ সাল
পর্যন্ত বোর্ডভিত্তিক আলাদা প্রশ্নে পরীক্ষা হতো। বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি
দলের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে তখন সারা দেশে অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া শুরু হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান
যুগান্তরকে বলেন, সারা দেশে অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার
সুফলই বেশি। আমরা মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পেয়েছি। সে অনুযায়ী ২০১৮
সালের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা অভিন্ন প্রশ্নে নেয়া হবে। আমরা এর প্রাথমিক
কার্যক্রম শুরু করেছি। শিগগিরই সব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের
সমন্বিত বৈঠক ডেকে বাকি কাজও সম্পন্ন করা হবে। বিভিন্ন বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে বোর্ডভিত্তিক আলাদা
প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া শুরু হলে এসএসসিতে বাংলা-ইংরেজিসহ ১২টি বিষয়ের প্রশ্ন আলাদা
হতো। কম গুরুত্বপূর্ণ বাকি প্রশ্নপত্র সব বোর্ডে অভিন্নই ছাপানো হতো। এইচএসসিতেও
বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞানের চারটি
বিষয়সহ যেসব প্রশ্ন ফাঁসের আশঙ্কা বেশি- সেগুলো বোর্ডভিত্তিক আলাদা হতো। এখন
অভিন্ন প্রশ্নেই পরীক্ষা হবে।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বাস্তব প্রয়োজনে
অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও এর ঝুঁকিগুলো বিবেচনায় আছে। সেগুলো
চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে বোর্ডগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একটি শিক্ষা বোর্ডের
চেয়ারম্যান নামপ্রকাশ না করে বলেন, অভিন্ন প্রশ্ন হলেও
নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশ্ন প্রণয়ন, মডারেশন, ছাপা ইত্যাদির ক্ষেত্রে আগের নীতিই অনুসরণ করা হবে। আগের নীতির মধ্যে
আছে, প্রত্যেক বোর্ড ৪ সেট করে প্রশ্ন তৈরি করে। সেখান
থেকে লটারি করে ছাপানোর জন্য ২টি এবং জরুরি প্রয়োজনে (যেমন ফাঁস হলে) তাৎক্ষণিক
ছাপানোর লক্ষ্যে সংরক্ষণের জন্য ২ সেট বাছাই করা হতো। এছাড়া প্রশ্ন প্রণয়নে
শিক্ষকরা কঠোর বিধিনিষেধের বেড়াজালে থাকেন। মডারেটররাও একই নীতি অনুসরণ করেন।
প্রণেতা এবং মডারেটররা ছাড়া কেউ প্রশ্ন সম্পর্কে জানতেন না। খোদ শিক্ষামন্ত্রীসহ
বোর্ডের চেয়ারম্যান-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা পরীক্ষার দিন সকালে প্রথমবারের মতো প্রশ্ন
দেখেন। এর আগে দেখারও সুযোগ নেই।
No comments
Post a Comment