বিজ্ঞান মেলা-১
বিজ্ঞান মেলায় প্রকল্প প্রদর্শনের জন্য বিবেচ্য
বিষয়সমূহ
বিজ্ঞাম মেলায় উপস্থাপিত প্রদর্শনী মূল্যায়নের জন্য তিনটি গ্রুপের জন্য
তিনটি বিচারক মণ্ডলী গঠন করতে হবে। তিনটি গ্রুপের বিচারকমণ্ডলীকেই পদার্থবিজ্ঞান,
রসায়ন, উদ্ভিদবিজ্ঞান/প্রাণিবিজ্ঞান, গণিত এবং তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ের বিশেষজ্ঞ
শিক্ষক/ব্যক্তিবর্গকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নিম্নলিখিত নীতি ও নম্বরের মাপকাঠি
বিবেচনায় রেখে বিচারকমণ্ডলী প্রতিটি প্রকল্প সম্পর্কে নম্বর প্রদান করবে এবং
মন্তব্যসহ মূল্যায়ন কাজ সমাপ্ত করবেন-
·
প্রকল্পের
মৌলিকতা ও স্বকীয়তা- ২০
·
গবেষণা,
নিরীক্ষা ও নতুন তথ্য উদঘাটন- ২০
·
উপকরণের
সহজলভ্যতা- ১৫
·
প্রকল্প বিষয়ে
বৈজ্ঞানিক ধারণা- ১৫
·
প্রকল্পের
কার্যকারিতা- ১০
·
দেশীয়
অর্থনীতিতে অবদান- ১০
·
সার্বিক
উপস্থাপনা- ১০
বিজ্ঞান মেলাকে আকর্ষণীয় করার জন্য আগের বছরের প্রকল্পগুলোকে চিহ্নিত করতে
হবে। যে সব প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা নেই সেগুলো যাতে বিজ্ঞান মেলায় প্রদর্শন করা না
হয় সে বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অবহিত করতে হবে। বিগত বছরে উপস্থাপিত হুবহু অনুকরণকৃত
প্রকল্পসমুহ পুরস্কারের জন্য মূল্যায়ন করা যাবে না।
বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের জন্য বিবেচ্য
বিষয়সমূহ
জেলা পর্যায়ের বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক
ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে জুনিয়র ও সিনিয়র গ্রুপ হিসেবে
অংশগ্রহণ করবে। পরবর্তীতে চূড়ান্ত আয়োজনে উপজেলায় অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে
জুনিয়র ও সিনিয়র গ্রুপ থেকে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীগণ এবং তাছাড়া জেলা সদরের
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি গ্রুপের জন্য প্রাক-বাছাইকৃত শিক্ষার্থী বিজ্ঞান
অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করবে।
বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা যাচাই করতে হবে। পরীক্ষা
বহিনির্বাচনি পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষায় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, গণিত
এবং আইসিটি বিষয়ে ১০০টি (সকল বিষয় সমহারে) প্রশ্ন থাকবে।
কয়েকটি নমুনা প্রজেক্ট
প্রকল্পের
নামঃ জীবন রক্ষায় ভেষজ উদ্ভিদ
নিম পাতার যত ঔষধী গুণাগুণ
নিম পাতা |
নিমের ফুল, পাতা ,বাকল তেল ব্যবহার করে মানুষের প্রায় ১০০ রোগের চিকিৎসা করা হয়। যেমন-
§ ম্যালেরিয়াঃ নিম পাতার নির্যাস ব্যবহারে ম্যালেরিয়া প্রশমিত হয়। পানি বা এলকোহল
মিশ্রিত নিম পাতার নির্যাস ব্যবহারে একই ধরনের ফল পাওয়া যায়।
§ মানসিক চাপ ও অশান্তিঃ অল্প পরিমাণ নিম পাতার নির্যাস খেলে মানসিক চাপ ও মানসিক অশান্তি কমে
যায়।
§ আলসারঃ নিম
পাতার নির্যাস ও নিম বীজ হতে নিম্বিডিন নির্যাস খেলে পেপটিক ও ডিওডেনাল আলসার উপশম
হয়।
§ ব্রণঃ নিম
পাতা পিষ্ট করে মধুর সাথে মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ব্রণ সেরে যায়।
§ জন্ডিসঃ ২৫-৩০
ফোঁটা নিম পাতার রস একটু মধুর সাথে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে জন্ডিস আরোগ্য হয়।
§ বহুমূত্র রোগঃ প্রতিদিন ১ টেবিল চামচ নিম পতার রস সকালে খালি পেটে ৩ মাস খেলে
ডায়বেটিস আরগ্য হয়। প্রতিদিন সকালে ১০টি নিম পাতা গুড়া বা চিবিয়ে সেবন করলে
ডায়বেটিস ভাল হয়। নিম পাতার রস খেলে ৩০-৭০% ইনসুলিন নেয়ার প্রবণতা কমে যায়।
§ বসন্তঃ কাঁচা
হলুদের সাথে নিম পাতা বেটে বসন্তের গুটিতে দিলে গুটি দ্রুত শুকিয়ে যায়।
§ রাতকানাঃ নিম
ফুল ভাজা খেলে রাতকানা উপশম হয়।
§ চোখের ব্যথাঃ নিম পাতা সামান্য শুস্ক আদা ও সৈন্ধব লবণ একত্রে পেষণ করে সামান্য গরম
করে একটি পরিস্কার পাতলা কাপড়ে লাগিয়ে তা দ্বারা চোখ ঢেকে দিলে চোখের স্ফীতি ও
ব্যথা সেরে যায়।
§ মাথাধরাঃ নিম
তেল মাখলে মাথা ধরা কমে যায়।
§ ক্যান্সারঃ নিম তেল, বাকল ও পাতার নির্যাস ব্যবহারে ক্যান্সার-টিউমার, স্কীন ক্যান্সার প্রভৃতি ভাল হয়।
§ উকুনঃ নিমের
ফুল বেটে মাথায় মাখলে উকুন মরে যায়।
§ হৃদরোগঃ নিম
পাতার নির্যাস খেলে হৃদরোগে উপকার পাওয়া যায়। নিম নির্যাস ব্লাড প্রেসার ও
ক্লোরেস্টোরল কমায়। রক্ত পাতলা করে, হার্টবিট কমায়।
§ কৃমি নিরসনঃ ৩-৪গ্রাম নিম ছাল চূর্ণ সামান্য পরিমাণ সৈন্ধব লবণসহ সকালে খালি পেটে
সেবন করে গেলে কৃমির উপদ্রব হতে রক্ষা পাওয়া যায়। নিয়মিত এক সপ্তাহ সেবন করে যেতে
হব। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ১-২ গ্রাম মাত্রায় সেব্য।
§রক্ত পরিস্কার ও চর্ম রোগঃ কাঁচা নিম পাতা ১০ গ্রাম ২ কাপ পানিতে জ্বাল করে ১ (এক) কাপ অবশিষ্ট
থাকতে ছেঁকে নিয়ে প্রয়োজন মতো চিনি মিশিযে সেব্য।
§দাঁতের যত্নঃ কচি নিম ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত ভাল থাকে। নিম পাউডার দিয়ে দাঁত
মাজলে দাঁত ও মাঁড়ি ভাল থাকে। নিম পাতার নির্যাস পানিতে মিশিয়ে বা নিম দিয়ে মুখ
আলতোভাবে ধুয়ে ফেললে দাঁতের আক্রমণ, দাঁতের পচন, রক্তপাত ও মাড়ির ব্যথা কমে যায়।
§ খোস-পাঁচড়া ও পুরনো ক্ষতঃ নিম পাতার সাথে সামান্য কাঁচা হলুদ পিষে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে প্রলেপ
আকারে ৭-১০ দিন ব্যবহার করলে খোস-পাঁচড়া ও পুরনো ক্ষতের উপশম হয়। নিম পাতা ঘিয়ে
ভেজে সেই ঘি ক্ষতে লাগালে ক্ষত অতি সত্বর আরোগ্য হয়।
§ বমিঃ বমি
আসতে থাকলে নিম পাতার রস ৫-৬ ফোঁটা দুধ দিয়ে খেলে উপশম হয়।
বাসক পাতার যত ঔষধী গুণাগুণ
বাসক পাতা |
বাসক একটি ভারত উপমহাদেশীয়
ভেষজ উদ্ভিদ। আর্দ্র, সমতলভূমিতে
এটি বেশী জন্মে। লোকালয়ের কাছেই জন্মে বেশী। হালকা হলুদে রংয়ের ডালপালাযুক্ত ১
থেকে ২ মি. উঁচু গাছ, ঋতুভেদে সর্ব্বদাই প্রায় সবুজ থাকে।
বল্লমাকারের পাতা বেশ বড়। ফুল ঘন, ছোট স্পাইকের ওপর
ফোটে। স্পাইকের বৃন্ত পাতার চেয়ে ছোট। স্পাইকের ওপর পাতার আকারে উপপত্র থাকে যার
গায়ে ঘন এবং মোটা শিরা থাকে। ফুলের দল (কোরোল্লা বা পত্রমূলাবর্ত) সাদা বর্ণ। তার
ওপর বেগুনী দাগ থাকে। ফল সুপারি আকৃতির; বীজে ভর্তি।
১. বাসক পাতার রস ১-২ চামচ হাফ থেকে এক চামচ মধুসহ
খেলে শিশুর সদির্কাশি উপকার পাওয়া যায়।
২. বাসক পাতার রস স্নানের আধ ঘন্টা আগে মাথায়
কয়েকদিন মাখলে উকুন মরে যায়। আমবাত ও ব্রণশোথে (ফোঁড়ার প্রাথমিক অবস্থা) বাসক
পাতা বেটে প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা কমে যায়।
৩. যদি বুকে কফ জমে থাকে এবং তার জন্যে শ্বাসকষ্ট
হলে বা কাশি হলে বাসক পাতার রস ১-২ চামচ এবং কন্টিকারীরস ১-২ চামচ, ১ চামচ মধুসহ খেলে কফ সহজে বেরিয়ে আসে।
৪. প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রনা থাকলে বাসকের ফুল
বেটে ২-৩ চামচ মিছরি ১-২ চামচ সরবত করে খেলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।
৫. জ্বর হলে বা অল্প জ্বর থাকলে বাসকের মূল ৫-১০
গ্রাম ধুয়ে থেঁতো করে ১০০ মিলি লিটার জলে ফোটাতে হবে।
৬. ২৫ মিলি লিটার থাকতে নামিয়ে তা ছেঁকে নিয়ে
দিনে ২ বার করে খেলে জ্বর এবং কাশি দুইই চলে যায়।
৭. বাসকের কচিপাতা ১০-১২ টি এক টুকরো হলুদ একসঙ্গে
বেটে দাদ বা চুলকানিতে লাগলে কয়েকদিনের মধ্যে তা সেরে যায়।
৮. বাসকপাতা বা ফুলের রস ১-২ চামচ মধু বা চিনি
১চামচসহ প্রতিদিন খেলে জন্ডিস রেগে উপকার পাওয়া যায়।
৯. পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে
বাসক পাতা ২০ টি থেঁতো করে ২ কাপ জলে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ঈষদুষ্ণ
অবস্থায় কুলকুচি করলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।
ভেষজ দাওয়াই:
* শিশুর পেটে কৃমি থাকলে বাসকের ছালের ক্বাথ
খাওয়ালে এর উগ্র তিক্ত স্বাদ কৃমি বের হয়ে যায়।
* যাদের গায়ে ঘামের গন্ধ হয় তারা বাসক পাতার রস
গায়ে লাগালে দুর্গন্ধ দূর হবে।
*বাসকপাতার রস ও শঙ্খচূর্ণ মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার
করলে রং ফরসা হবে।
* এক কলসি পানিতে তিন-চারটি বাসকপাতা ফেলে তিন-চার
ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায়। এরপর ব্যবহার করতে পারেন।
* পাতার রস নিয়মিত খেলে খিঁচুনি রোগ দূর হয়ে
যায়।
* বাসক পাতার রস মাথায় লাগালের উকুন চলে যায়।
* বাসক পাতা বা ফুলের রস এক বা দুই চামচ মধু বা
চিনি দিয়ে খেলে জন্ডিস ভালো হয়।
* শরীরে দাদ থাকলে বাসক পাতার রস লাগালে ভালো হয়ে
যায়।
তুলসী পাতার অজানা যত
উপকারিতা
তুলসী পাতা |
তুলসী গাছ
আমাদের সবারই কমবেশি চেনা। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ocimum
tenuiflorum, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য তুলসী পবিত্রতার প্রতীক। তাই একে হলি বেসিলও বলা হয়ে থাকে।
বিভিন্ন রোগ নিরাময় করার ক্ষমতা তুলসী পাতার আছে। প্রচলিত আছে যে, তুলসী পাতা নিয়মিত সেবন করলে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন লাভ করা যায়। আসুন
জেনে নেই তুলসী পাতার উপকারিতা গুলো।
১। নিরাময় ক্ষমতা
তুলসী পাতার অনেক ঔষধি গুনাগুণ আছে। তুলসি পাতা নার্ভ টনিক ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি কারী। এটা শ্বাস নালী থেকে সর্দি–কাশী দূর করে। তুলসীর ক্ষত সারানোর ক্ষমতা আছে। তুলসী পাকস্থলীর শক্তি বৃদ্ধি করে ও অনেক বেশি ঘাম নিঃসৃত হতে সাহায্য করে।
২। জ্বর ভালো করে
তুলসীর জীবাণু নাশক, ছত্রাক নাশক ও ব্যাক্টেরিয়া নাশক ক্ষমতা আছে। তাই এটা জ্বর ভালো করতে পারে। সাধারণ জ্বর থেকে ম্যালেরিয়ার জ্বর পর্যন্ত ভালো করতে পারে তুলসী পাতা।
- আধা লিটার পানিতে কিছু তুলসী পাতা ও এলাচ গুঁড়া দিয়ে ফুটিয়ে নিন
- এক্ষেত্রে তুলসী ও এলাচ গুঁড়ার অনুপাত হবে ১:০.৩
- জ্বাল দিতে দিতে মিশ্রণটিকে অর্ধেক করে ফেলুন
- মিশ্রণটির সাথে চিনি ও দুধ মিশিয়ে ২-৩ ঘণ্টা পর পর পান করুন
- এই মিশ্রণটি শিশুদের জন্য অনেক কার্যকরী।
৩। ডায়াবেটিস নিরাময় করে
তুলসী পাতায় প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও এসেনশিয়াল অয়েল আছে যা ইউজেনল, মিথাইল ইউজেনল ও ক্যারিওফাইলিন উৎপন্ন করে। এই উপাদান গুলো অগ্নাশয়ের বিটা সেলকে কাজ করতে সাহায্য করে( বিটা সেল ইনসুলিন জমা রাখে ও নিঃসৃত করে)। যার ফলে ইনসুলিন এর সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। এতে ব্লাড সুগার কমে এবং ডায়াবেটিস ভালো হয়।
৪। কিডনি পাথর দূর করে
রক্তের ইউরিক এসিড-এর লেভেলকে কমতে সাহায্য করে কিডনিকে পরিষ্কার করে তুলসী পাতা। তুলসীর অ্যাসেটিক এসিড এবং এসেনশিয়াল অয়েল এর উপাদান গুলো কিডনির পাথর ভাঙতে সাহায্য করে ও ব্যাথা কমায়। কিডনির পাথর দূর করার জন্য প্রতিদিন তুলসী পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত ৬ মাস খেলে কিডনি পাথর দূর হবে।
৫। ক্যান্সার নিরাময় করে
তুলসীর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি কারসেনোজেনিক উপাদান ব্রেস্ট ক্যান্সার ও ওরাল ক্যান্সার এর বৃদ্ধিকে বন্ধ করতে পারে। কারণ এর উপাদানগুলো টিউমারের মধ্যে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়। উপকার পেতে প্রতিদিন তুলসীর রস খান।
৬। শিশুদের বিভিন্ন অসুখ যেমন- ঠাণ্ডা, জ্বর,ডায়রিয়া, বমি ইত্যাদি ভালো করে। শিশুদের চিকেন পক্সের দাগ যদি না যায় তাহলে তুলসীর রসের সাথে জাফরান মিশিয়ে ব্যবহার করলে দাগ দূর হবে।
৭। তুলসীর স্ট্রেস কমানোর ক্ষমতা আছে। সুস্থ মানুষও প্রতিদিন ১২ টি তুলসী পাতা চিবালে স্ট্রেস মুক্ত থাকতে পারবেন।
৮। তুলসী পাতা মুখের আলসার ভালো করতে পারে।
৯। মাথা ব্যথা ভালো করতে পারে।এর জন্য চন্দনের পেস্ট এর সাথে তুলসী পাতা বাটা মিশিয়ে কপালে লাগালে মাথাব্যথা ভালো হবে।
১০। ওজন কমতে সাহায্য করে
১১। দাঁতের জন্য ভালো।
১২। তুলসী পাতা রক্ত পরিষ্কার করে, কোলেস্টেরল কমায়
১৩। পোকায় কামড় দিলে তুলসীর রস ব্যবহার করলে ব্যথা দূর হয়।
১। নিরাময় ক্ষমতা
তুলসী পাতার অনেক ঔষধি গুনাগুণ আছে। তুলসি পাতা নার্ভ টনিক ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি কারী। এটা শ্বাস নালী থেকে সর্দি–কাশী দূর করে। তুলসীর ক্ষত সারানোর ক্ষমতা আছে। তুলসী পাকস্থলীর শক্তি বৃদ্ধি করে ও অনেক বেশি ঘাম নিঃসৃত হতে সাহায্য করে।
২। জ্বর ভালো করে
তুলসীর জীবাণু নাশক, ছত্রাক নাশক ও ব্যাক্টেরিয়া নাশক ক্ষমতা আছে। তাই এটা জ্বর ভালো করতে পারে। সাধারণ জ্বর থেকে ম্যালেরিয়ার জ্বর পর্যন্ত ভালো করতে পারে তুলসী পাতা।
- আধা লিটার পানিতে কিছু তুলসী পাতা ও এলাচ গুঁড়া দিয়ে ফুটিয়ে নিন
- এক্ষেত্রে তুলসী ও এলাচ গুঁড়ার অনুপাত হবে ১:০.৩
- জ্বাল দিতে দিতে মিশ্রণটিকে অর্ধেক করে ফেলুন
- মিশ্রণটির সাথে চিনি ও দুধ মিশিয়ে ২-৩ ঘণ্টা পর পর পান করুন
- এই মিশ্রণটি শিশুদের জন্য অনেক কার্যকরী।
৩। ডায়াবেটিস নিরাময় করে
তুলসী পাতায় প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও এসেনশিয়াল অয়েল আছে যা ইউজেনল, মিথাইল ইউজেনল ও ক্যারিওফাইলিন উৎপন্ন করে। এই উপাদান গুলো অগ্নাশয়ের বিটা সেলকে কাজ করতে সাহায্য করে( বিটা সেল ইনসুলিন জমা রাখে ও নিঃসৃত করে)। যার ফলে ইনসুলিন এর সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। এতে ব্লাড সুগার কমে এবং ডায়াবেটিস ভালো হয়।
৪। কিডনি পাথর দূর করে
রক্তের ইউরিক এসিড-এর লেভেলকে কমতে সাহায্য করে কিডনিকে পরিষ্কার করে তুলসী পাতা। তুলসীর অ্যাসেটিক এসিড এবং এসেনশিয়াল অয়েল এর উপাদান গুলো কিডনির পাথর ভাঙতে সাহায্য করে ও ব্যাথা কমায়। কিডনির পাথর দূর করার জন্য প্রতিদিন তুলসী পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত ৬ মাস খেলে কিডনি পাথর দূর হবে।
৫। ক্যান্সার নিরাময় করে
তুলসীর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি কারসেনোজেনিক উপাদান ব্রেস্ট ক্যান্সার ও ওরাল ক্যান্সার এর বৃদ্ধিকে বন্ধ করতে পারে। কারণ এর উপাদানগুলো টিউমারের মধ্যে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয়। উপকার পেতে প্রতিদিন তুলসীর রস খান।
৬। শিশুদের বিভিন্ন অসুখ যেমন- ঠাণ্ডা, জ্বর,ডায়রিয়া, বমি ইত্যাদি ভালো করে। শিশুদের চিকেন পক্সের দাগ যদি না যায় তাহলে তুলসীর রসের সাথে জাফরান মিশিয়ে ব্যবহার করলে দাগ দূর হবে।
৭। তুলসীর স্ট্রেস কমানোর ক্ষমতা আছে। সুস্থ মানুষও প্রতিদিন ১২ টি তুলসী পাতা চিবালে স্ট্রেস মুক্ত থাকতে পারবেন।
৮। তুলসী পাতা মুখের আলসার ভালো করতে পারে।
৯। মাথা ব্যথা ভালো করতে পারে।এর জন্য চন্দনের পেস্ট এর সাথে তুলসী পাতা বাটা মিশিয়ে কপালে লাগালে মাথাব্যথা ভালো হবে।
১০। ওজন কমতে সাহায্য করে
১১। দাঁতের জন্য ভালো।
১২। তুলসী পাতা রক্ত পরিষ্কার করে, কোলেস্টেরল কমায়
১৩। পোকায় কামড় দিলে তুলসীর রস ব্যবহার করলে ব্যথা দূর হয়।
পুদিনা পাতার গুনাগুণ
পুদিনা পাতা |
১। গরমে ত্বকের
জ্বালাপোড়া ও ফুসকুরি সমস্যায় কয়েকটি পুদিনার পাতা চটকে গোসলের পানিতে মিশিয়ে
গোসল করলে ভালো কাজ হয়।
২। মুখের
দুর্গন্ধ দুর করতে পুদিনা পাতা পানির সাথে মিশিয়ে কুলি করুন।উপকার পাবেন।
৩। পুদিনা পাতা
হজম শক্তি বাড়ায়,মুখের
অরুচি ও গ্যাসের সমস্যা দুর করে,কর্মক্ষমতা বৃদ্বি করে ও
শরীর ঠান্ডা রাখে।
৪। পুদিনা ত্বকের যে কোনো
সংক্রমণকে ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। শুকনো পুদিনা পাতা ফুটিয়ে পুদিনার
পানি তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিন। এক বালতি পানিতে দশ থেকে পনেরো চামচ পুদিনার পানি
মিশিয়ে গোসল করুন। এর ফলে গরমকালে শরীরে ব্যাকটেরিয়া জনিত বিশ্রী দুর্গন্ধের হাত
থেকে রেহাই পাবেন, কেননা পুদিনার অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট গুণ
অতুলনীয়। ঘামাচি, অ্যালার্জিও হবে না।
৫। পুদিনা পাতার রস তাৎক্ষণিক ব্যথানাশক উপাদান হিসেবে কাজ করে। পুদিনা পাতার রস চামড়ার ভেতর দিয়ে নার্ভে পৌঁছে নার্ভ শান্ত করতে সহায়তা করে। তাই মাথা ব্যথা বা জয়েন্টে ব্যথা উপশমে পুদিনা পাতা ব্যবহার করা যায়। মাথা ব্যথা হলে পুদিনা পাতার চা পান করতে পারেন। অথবা তাজা কিছু পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। জয়েন্টে ব্যথায় পুদিনা পাতা বেটে প্রলেপ দিতে পারেন।
৫। পুদিনা পাতার রস তাৎক্ষণিক ব্যথানাশক উপাদান হিসেবে কাজ করে। পুদিনা পাতার রস চামড়ার ভেতর দিয়ে নার্ভে পৌঁছে নার্ভ শান্ত করতে সহায়তা করে। তাই মাথা ব্যথা বা জয়েন্টে ব্যথা উপশমে পুদিনা পাতা ব্যবহার করা যায়। মাথা ব্যথা হলে পুদিনা পাতার চা পান করতে পারেন। অথবা তাজা কিছু পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। জয়েন্টে ব্যথায় পুদিনা পাতা বেটে প্রলেপ দিতে পারেন।
৬। পুদিনা পাতার
চা শরীরের ব্যাথা দুর করতে খুবই উপকারি।
৭। মাইগ্রেনের
ব্যাথা দুর করতে নাকের কাছে টাটকা পুদিনা পাতা ধরুন।এর গন্ধ মাথাব্যাথা সারাতে
খুবই উপকারি।
৮। কোন ব্যাক্তি
হঠাত করে অগ্গান হয়ে গেলে তার নাকের কাছে পুদিনা পাতা ধরুন।সেন্স ফিরে আসবে।
৯। অনবরত হেচকি
উঠলে পুদিনা পাতার সাথে গোলমরিচ পিষে ছেকে নিয়ে রসটুকু পান করুন।কিছুক্ষনের
মধ্যেই হেচকি বন্ধ হয়ে যাবে।
১০। গোলাপ, পুদিনা, আমলা, বাঁধাকপি ও শশার নির্যাস একসঙ্গে মিশিয়ে টোনার তৈরি করে মুখে লাগালে
তা ত্বককে মসৃণ করে তোলে।
১১। পুদিনা পাতায় রয়েছে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসের চমৎকারী গুনাগুণ যা পেটের যে কোনো
সমস্যার সমাধান করতে পারে খুব দ্রুত। যারা হজমের সমস্যা এবং পেটের ব্যথা কিংবা
পেটের অন্যান্য সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা খাবার পর এককাপ পুদিনা পাতার চা খাওয়ার অভ্যাস
করুন। ৬/৭টি তাজা পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে মধু মিশিয়ে খুব সহজে পুদিনা পাতার
চা তৈরি করতে পারেন ঘরে।
১২। পুদিনাপাতা
পুড়িয়ে ছাই দিয়ে মাজন বানিয়ে দাত মাজলে মাড়ি থাকবে সুস্থ,দাত হবে শক্ত ও মজবুত।
১৩। দীর্ঘদিন
রোগে ভুগলে বা কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থাকলে অনেক সময় অরুচি হয়।এক্ষেত্রে পুদিনা পাতার
রস ২ চা চামচ,কাগজি
লেবুর রস ৮-১০ ফোটা,লবণ হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে সকাল
বিকাল ২ বেলা খান।এভাবে ৪-৫ দিন খেলে অরুচি দুর হয়ে যাবে।
১৪।
তাত্ক্ষনিকভাবে ক্লান্তি দুর করতে পুদিনা পাতার রস ও লেবুর রস একসংে মিশিয়ে
পান করুন।ক্লান্তি নিমিষেই দুর হয়ে যাবে।
১৫। কফ দুর করতে
পুদিনা পাতার রস,তুলসী
পাতার রস,আদার রস ও মধু একসাথে মিশিয়ে খান।পুরোনো কফ দুর
করতেও এই মিস্রণ অতুলনীয়।
১৬।
সুস্থ হার্টের জন্য পুদিনা পাতা অনেক উপকারী। এটি রক্তে কলেস্টরেল জমতে বাধা
প্রদান করে। ফলে হার্ট থাকে সুস্থ।
১৭।
যেকোনো কারনে পেটে গ্যাস জমে গেলে পুদিনা পাতা কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।
পুদিনার রস ২ চা চামচ, সামান্য লবন, কাগজী
লেবুর রস ৮/১০ ফোঁটা, হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে সারাদিন ২-৩ বার
খেলে পেটে গ্যাস ভাব কমে আসে।
১৮।
পিত্তে শ্লেষ্মার জ্বর, অম্লপিত্ত, আমাশা, অজীর্ণ, উদরশূল, প্রভৃতির কারনে অনেকসময় আমাদের
বমি বমি ভাব আসে। এসময় পুদিনার শরবতের সাথে এক চা চামুচ তেঁতুল মাড় ও চিনি মিশিয়ে
খেলে বমিভাদ দূর হয়ে যায়।
১৯।
পুদিনা পাতার রস উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত পুদিনা পাতার রস
খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
২০।
পুদিনার শেকড়ের রস উকুননাশক হিসেবে খুবই কার্যকরী, এমনকি পাতাও। পুদিনার পাতা বা শেকড়ের রস
চুলের গোড়ায় লাগান। এরপর একটি পাতলা কাপড় মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর
চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দু বার এটা করুন। এক মাসের মধ্য চুল হবে উকুনমুক্ত।
২২।
পুদিনা ত্বককে শীতল করে। খাবারের সঙ্গে নিয়মিত খেলে শরীরের ত্বক সতেজ হয়, সজীব ভাব বজায় থাকে। মৃত কোষকে দূর করে মৃসণ
করে তোলে ত্বক। সেজন্য, আধা কাপ পুদিনা পাতা বাটা ও পরিমিত বেসন দিয়ে
পেস্ট করে মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে নিলে, উপকার
পাওয়া যায়।
২৩।
ব্রণ দূর করতে ও ত্বকের তৈলাক্তভাব কমাতে তাজা পুদিনাপাতা বেটে ত্বকে লাগান। দশ
মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের দাগ দূর করতে প্রতিদিন রাতে পুদিনা পাতার রস
আক্রান্ত স্থানে লাগান। সম্ভব হলে সারারাত রাখুন। নতুন কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা। তারপর
ধুয়ে ফেলুন। মাস খানেকের মাঝেই দাগ দূর হবে।
২৪। পুদিনা পাতার রস শ্বাস-প্রশ্বাসের নালী খুলে দেওয়ার কাজে সহায়তা করে। ফলে যারা অ্যাজমা এবং কাশির সমস্যায় পড়েন তাদের সমস্যা তাৎক্ষণিক উপশমে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরী। খুব বেশি নিঃশ্বাসের এবং কাশির সমস্যায় পড়লে পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানির ভাপ নিন এবং তা দিয়ে গার্গল করার অভ্যাস তৈরি করুন।
২৪। পুদিনা পাতার রস শ্বাস-প্রশ্বাসের নালী খুলে দেওয়ার কাজে সহায়তা করে। ফলে যারা অ্যাজমা এবং কাশির সমস্যায় পড়েন তাদের সমস্যা তাৎক্ষণিক উপশমে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরী। খুব বেশি নিঃশ্বাসের এবং কাশির সমস্যায় পড়লে পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানির ভাপ নিন এবং তা দিয়ে গার্গল করার অভ্যাস তৈরি করুন।
২৫। পেটের পীড়ায়ঃ এটি ইরেটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম [ আইবিএস ] এবং দীর্ঘস্থায়ী বদহজমের
বিরুদ্ধে খুবই কার্যকর। এছাড়াও পুদিনা কোলনের পেশী সংকোচন নিয়ন্ত্রন করে।
২৬।
অ্যাজমাঃ পুদিনায় রোজমেরিক এসিড নামের এক
ধরনের উপাদান থাকে। এটি প্রাকপ্রদাহী পদার্থ তৈরীতে বাধা দেয়। ফলে অ্যাজমা হয়
না। এছাড়াও এ ঔষধি প্রোস্টসাইক্লিন তৈরীতে বাধা দেয়। তাতে শাসনালী পরিষ্কার
থাকে।
২৭। রোদে পোড়া ত্বকের
জ্বালাপোড়া কমাতে পুদিনা পাতার রস ও অ্যালোভেরার রস একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান।
পনেরো মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
২৮।
পুদিনা পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে। পুদিনা পাতার পেরিলেল
অ্যালকোহল যা ফাইটোনিউরিয়েন্টসের একটিউপাদান দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাঁধা
প্রদান করে।
২৯।
পুদিনার তাজা পাতা পিষে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর যদি তা ধুয়ে ফেলা যায়, তা হলে মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হয়ে যায়।
ব্রণ ওঠাও বন্ধ হয়।
৩০।
পুদিনার পাতা ভালো করে পিষে তার রস ভালো করে মাথায় ব্যবহার করেন। যাদের
চুলে উকুন আছে, তারা খুব উপকার
পাবেন।
পাথরকুচি পাতার গুনাগুণ বা উপকারিতা
পাথরকুচি পাতা |
পাথরকুচি ঔষধি উদ্ভিদ। দেড় থেকে দুই ফুট উঁচু হয়। পাতা
মাংসল ও মসৃণ, আকৃতি অনেকটা ডিমের মতো।
চারপাশে আছে ছোট ছোট গোল খাঁজ। এই খাঁজ থেকে নতুন চারার জন্ম হয়। অনেক সময় গাছের
বয়স হলে ওই গাছের খাঁজ থেকে চারা গজায়। পাতা মাটিতে ফেলে রাখলেই অনায়াসে চারা
পাওয়া যায়। কাঁকর মাটিতে সহজেই জন্মে, তবে ভেজা, স্যাঁতসেঁতে জায়গায় দ্রুত বাড়ে।
পাতা থেকে এ গাছ
জন্ম নেয়।উদ্ভিদের ধরণঃ বহু বর্ষজীবী সবুজ পাতা বিশিষ্ট।পরিচিতি: গুল্ম
জাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা মাংসল এবং মসৃন। পাতা দেখতে অনেকটা ডিম্বাকৃতি। কিনারা খাঁজ
কাটা। মুল কান্ডের অগ্রভাগে গুচ্ছবদ্ধ নিম্নামুখি ফুল হয়। দেখতে ঝালর বাতির মত।
ভিতরে ফাঁপা। ফুল লম্বায় এক থেকে দেড় ইঞ্চি হয়ে থাকে। পুস্পের বাহিরের দিকে সবুজ
লাল ও সাদা দাগ থাকে। শীতকালে ফুল ও গ্রীস্মকালে ফল হয়।
স্থানীয় নামঃ
পাথর কুচি
অন্য নামঃ
পাথর কুচি, পাথান বেইদ, পাষাণ ভেদস্থানীয় নাম : পাথর কুচিভেজষ
বৈজ্ঞানিক
নামঃ Bryophillum বা ব্রায়োফাইলাম
ভেজষ
নামঃ Kalanchoe pinnata
(Lamk.) Pers.
ফ্যামিলিঃ Crassulaceae
অন্য একটি পাথরকুচির পাতা অনেকটা গোল,
তার বোটানিক্যাল নামঃ Berginia ligulata Wall
ফ্যামিলিঃ Saxifragaceae ।
ইউনানি সম্প্রদায় এটিকে বলে আসল পাথরকুচি, আর কবিরাজরা পূর্বেরটিকে বলে আসল।
ব্যবহার্য অংশ :
পাতা
পাথরকুচি
পাতার ঔষধি গুনাগুনঃ
মেহ, সর্দি, মুত্র রোধে, রক্তপিত্তে, পেট ফাঁপায়, শিশুদের পেট ব্যথায়, মৃগীরোগে পাথরকুচির
ঔষধী গুনাগুন রয়েছে।
১। মেহঃ সর্দি জনিত
কারনে শরীরের নানান স্থানে ফোঁড়া দেখা দেয়। সেইকারনে ব্যথা হয়। যাকে মেহ বলা হয়। এ
ক্ষেত্রে পাথরকুচির পাতার রস এক চামুচ করে সকাল বিকাল একসপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া
যায়।
২। সর্দিতেঃ যে
সর্দি পুরান হয়ে গেছে সেই ক্ষেত্রে এটি বিশেষ উপযোগী। এই কফ বিকারে পাথরকুচি পাতা
রস করে সেটাকে একটু গরম করতে হবে এবং গরম অবস্থায় তার সাথে একটু সোহাগার খৈ মেশাতে
হবে। ৩ চা চামচের সাথে ২৫০ মিলিগ্রাম যেন হয়। তা থেকে ২ চা চামচ নিয়ে সকালে ও
বিকালে ২ বার খেতে হবে। এর দ্বারা পুরান সর্দি সেরে যাবে এবং সর্বদা কাসি থেকে
রেহাই পাওয়া যাবে।
৩। কাটা বা থেতলে
গেলেঃ টাটকা পাতা পরিমান মত হালকা তাপে পাতা গরম করে কাটা বা থেতলে যাওয়া
স্থানে সেক দিলে আরাম পাওয়া যায়।
৪। রক্তপিত্তেঃ
পিত্ত জনিত ব্যথায় রক্ত ক্ষরণ হলে দু’বেলা এক
চা চামচ পাথর কুচির পাতার রস দুইদিন খাওয়ালে সেরে যাবে।
৫। পেট ফাঁপায়ঃ
প্রত্যক্ষতঃ দেখা যায় পেটটা ফুলে গেছে, প্রস্রাব আটকে যাছে, আধোবায়ু, সরছেনা, সেই ক্ষেত্রে একটু
চিনির সাথে এক বা দুই চা চামচ পাথর কুচির পাতার রস গরম করে সিকি কাপ পানির সাথে
মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এর দ্বারা মুত্র সরল হবে, আধো বায়ুরও নিঃসরণ হবে, ফাঁপাটাও কমে যাবে।
৬। শিশুদের পেট
ব্যথায়ঃ শিশুর পেটব্যথা হলে, ৩০-৬০ ফোঁটা পাথর কুচির পাতার রস পেটে মালিশ করলে ব্যথার ঊপশম হয়।তবে
পেট ব্যথা নিশ্চিত হতে হবে।
৭। মৃগী রোগেঃ
রোগাক্রান্ত সময়ে পাথর কুচির পাতার রস ২-১০ ফোঁটা করে মুখে দিতে হবে। একটু
পেটে গেলেই রোগের ঊপশম হবে।
৮। শরীর জালাপোড়ায়ঃ
দু চামচ পাথর কুচি পাতার রস আধা কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে দুবেলা সবনে শরীরের জালাপোড়া দুর
হয়।
৯।
কিডনির পাথর অপসারণে পাথরকুচি পাতাঃ পাথরকুচি পাতা
কিডনি এবং গলব্লাডারের পাথর অপসারণ করতে সাহায্য করে। দিনে দুই বার ২ থেকে ৩ টি
পাতা চিবিয়ে অথবা রস করে খান।
১০। জন্ডিস নিরাময়েঃ লিভারের যেকোনো সমস্যা থেকে
রক্ষা করতে তাজা পাথরকুচি পাতা ও এর জুস অনেক উপকারী।
১১। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং মুত্রথলির
সমস্যা থেকে পাথরকুচি পাতা মুক্তি দেয়।
১২। পাথরকুচি পাতার রসের সাথে গোল মরিচ মিশিয়ে
পান করলে পাইলস্ ও অর্শ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১৩।
কলেরা, ডাইরিয়া বা রক্ত আমাশয়
রোগ সারাতে পাথরকুচি পাতার জুড়ি নেই। ৩ মি.লি. পাথরকুচি পাতার জুসের সাথে ৩ গ্রাম
জিরা এবং ৬ গ্রাম ঘি মিশিয়ে কয়েক দিন পর্যন্ত খেলে এসব রোগ থেকে উপকার পাওয়া যায়।
১৪। ত্বকের যত্নেঃ পাথরকুচি পাতায় প্রচুর পরিমাণে
পানি থাকে যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। সাথে সাথেই এর মধ্যে জ্বালা-পোড়া কমানোর
ক্ষমতা থাকে। যারা ত্বক সম্বন্ধে অনেক সচেতন তারা পাথরকুচি পাতা বেটে ত্বকে লাগাতে
পারেন। ব্রণ ও ফুস্কুড়ি জাতীয় সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
১৫। বিষাক্ত পোকায় কামড়ালে এই পাতার রস আগুনে সেঁকে লাগালে
উপকার পাওয়া যায়।
ত্রিফলার
গুনাগুণ
ত্রিফলা |
বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্য
সুরক্ষায় অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের পাশাপাশি আয়ুর্বেদিকের গুণাগুণ খাটো করে দেখা সম্ভব
নয়। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিককে এগিয়ে রাখা সম্ভব। কেননা, অ্যালোপ্যাথিক
ওষুধের ব্যবহারে অনেক সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়, যা
আয়ুর্বেদিকের ক্ষেত্রে হয় না।
আমাদের দেশে নানা জায়গায়
আর্য়ুবেদিক ওষুধ নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এমন একটি হলো ত্রিফলা। হরিতকী, বহেরা আর আমলকী এই
তিন ফলের মিশ্রণে তৈরি হয় ত্রিফলা। এদের যেমন আলাদা গুণ আছে তেমনি একসঙ্গে এর
গুণাগুণের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। এবার জেনে নেয়া যাক ত্রিফলাতে আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য কি কি উপকারী গুণ রয়েছে-
* নিয়মিত ত্রিফলার
সেবন সিজনাল ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি,
জ্বরের হাত থেকে দূরে রাখে।
* ত্রিফলা দেহের
ভারসাম্য বজায় রাখে, দেহ পরিষ্কার রাখে ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন আর মিনারেলস দেয়।
* মানবদেহের বর্জ্য
নিষ্কাশন করা আর ডিটক্সিফাই করায় ত্রিফলার মোকাবেলা আর কেউ করতে পারবে না।
* কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
করতে ত্রিফলা কার্যকরী। এছাড়া এটি হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ও বদহজম জনিত
সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
* শরীরে ফ্যাট সেল
জমতে না দিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
* অন্ত্রের সব বর্জ্য
দূর করে খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়ায়।
* এর উচ্চমাত্রার
ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
* ডিটক্সিফাই করে আর
শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ভালো রেখে ত্রিফলা ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়।
* দেহে টক্সিন জমার
কারণে হওয়া চর্মরোগ যেমন ব্রণ, হোয়াইট হেডস দূরে রাখে।
* ত্রিফলার বিভিন্ন
এনজাইম আর অ্যান্টিঅক্সিডান্ট ত্বকের বার্ধক্যজনিত ভাঁজ পড়ার হার কমায়। আর তারুণ্য
বজায় রাখে।
* ত্রিফলা চুলের
প্রয়োজনীয় ভিটামিন আর মিনারেলস সরবরাহ করে।
* ত্রিফলার মধ্যে
থাকা আমলকী আর হরিতকী চুল পড়া কমায় ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
ত্রিফলা
সেবনের উপায়ঃ
নিয়মিত সেবনের জন্য ত্রিফলার গুঁড়া
ব্যবহার করাই উত্তম। এক্ষেত্রে প্রতি রাতে এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ ত্রিফলা
গুঁড়া ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পানিটা খেয়ে নেয়া যেতে পারে। এছাড়াও ত্রিফলার
সাপ্লিমেনট পাওয়া যায় বাজারে। গুঁড়া না সাপ্লিমেনট ব্যবহার করতে পারেন।
অর্জুন গাছের ঔষধিগুণ
অর্জুন পাতা |
ভেষজ শাস্ত্রে ঔষধি গাছ
হিসাবে আর্জুনের ব্যবহার অগনিত। বলা হয়ে থাকে,
বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা আর এক জন ডাক্তার থাকা একই কথা। এর
ঔষধি গুন মানবসমাজের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে সুপ্রাচীন কাল থেকেই।শরীরের বল ফিরিয়ে
আনা এবং রণাঙ্গনে মনকে উজ্জীবিত রাখতে অর্জুন ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে মহাভারত ও
বেদ-সংহিতায়।তার পর যত দিন যাচ্ছে ততই অর্জুনের উপকারী দিক উদ্ভাবিত হচ্ছে।
§ যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রাক্তচাপ নাই, তাদের পক্ষে অর্জুন ছাল কাঁচা হলে ১০-১২ গ্রাম,
শুকনা হলে ৫-৬ গ্রাম
একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মি লি জল এর সাথে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে বিকেলবেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি কমে যায়।তবে পেটে যাতে বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
একটু ছেঁচে ২৫০ মিলি দুধ ও ৫০০ মি লি জল এর সাথে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক ১২৫ মিলি থাকতে ছেঁকে বিকেলবেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি কমে যায়।তবে পেটে যাতে বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
§ অর্জুন ছাল বেটে খেলে হৃৎপিন্ডের পেশি শক্তিশালী
হয়, হৃৎপিন্ডের ক্ষমতা বাড়ে।এটি
রক্তের কোলেষ্টরল কমায় এবং ফলত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
§ বিচুর্ণ ফল মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং
লিভারসিরোসিসের টনিক হিসাবে ব্যাবহৃত হয়।
§ অর্জুনের ছালে ট্যানিন রয়েছে, এ টানিন মুখ,জিহ্বা ও
মাড়ীর প্রদাহের চিকিৎসায় ব্যাবহার হয়।এটি মাঢ়ীঢ় রক্তপাত বন্ধ করে এবং শরীরে
ক্ষত, খোস পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছাল বেটে লাগালে
সেরে যায়।
§ অর্জুনের ছাল হাঁপানি, আমাশয়, ঋতুস্রাবজনিত
সমস্যা, ব্যথ্যা ,প্রদর ইত্যাদি
চিকিৎসায়ও উপকারী।
§ এটি সংকোচ ও জ্বর নিবারক হিসাবেও কাজ করে।
§ অর্জুনের ছালে খাদ্যা হজম ক্ষমতা
বাড়ায়।খাদ্যাতন্ত্রের ক্রিয়া স্বভাবিক রাখতে সাহায্য করে
চিরতা পাতার গুনাগুণ
•
নিয়মিত তিতা খাবার খেলে অসুখ হওয়ার
প্রবণতা কম থাকে। চিরতা এরমধ্যে অন্যতম।
•
চিরতা খেলে যেকোনো কাটা, ছেঁড়া, ক্ষতস্থান দ্রুত
শুকায়।
•
ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য চিরতা ভীষণ জরুরি পথ্য।
চিরতার রস দ্রুত রক্তে চিনির মাত্রা কমিয়ে দেয়।
•
উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল, উচ্চরক্তচাপ, অতি ওজনবিশিষ্ট
ব্যক্তির জন্যও চিরতা দরকারি।
•
টাইফয়েড জ্বর হওয়ার পর আবারও অনেকের প্যারাটাইফয়েড
জ্বর হয়। তাই টাইফয়েড জ্বরের পরে চিরতার রস খেলে যথেষ্ট উপকার পাওয়া যায়।
•
চিরতার রস কৃমিনাশক।
•
তারুণ্য ধরে রাখতেও চিরতার গুরুত্ব অপরিসীম।
•
শরীরের ঝিমুনিভাব, জ্বরজ্বর লাগা দূর করে চিরতার
রস।
•
. নিয়মিত তিতা বা চিরতার রস খেলে ফুড
পয়জনিং হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
No comments
Post a Comment